সময়ের উন্নয়ন ডেস্ক:-
বান্দরবানের লামা পৌর শহরে জীবন ও সভ্যতা বান্ধব বাজার পুকুরটি দখলদারদের আগ্রাসনে অস্তিত্ব হারাচ্ছে। নিরাপদ জলের ভান্ডার ঐতিহাসিক নির্দশন এই পুকুর উদ্ধারের দাবি উঠেছে। লামা শহরে প্রথম পাবলিক পুকুরটি দখল দূষনের শিকার হয়ে ময়লার ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে। উনিশ শতকে পুকুরটি খনন করা হয়েছিল বলে ধারণা করছেন ব্যবসায়ীরা। ঐতিহাসিকভাবেও পুকুরটির গুরুত্ব অনেক খানি। তাছাড়া পানির ভান্ডার হিসেবেও এই পুকুরের প্রয়োজন কোনো সময় পুরাবার নয়। নকশানুযায়ী এই জলভান্ডারটিকে পূর্বের অবস্থায় ফিরিয়ে আনার গণ দাবি উঠেছে লামা শহরে। এই পুকুরটি দখল, দূষণের বিষয়ে নেতৃস্থানীয় মহলের নিরবতায় কেমন যেন রহস্য লুকিয়ে আছে।
বাংলাদেশ পরিবেশ সংরক্ষণ আইন ১৯৯৫-এ পরিষ্কার বলা আছে, “অন্য কোনো আইনে যাহা কিছুই থাকুন না কেন, জলাধার হিসাবে চিহ্নিত জায়গা ভরাট করা যাইবে না।”প্রাকৃতিক জলাধার সংরক্ষণ আইন ২০০০ অনুযায়ী, কোনো পুকুর, জলাশয়, নদী, খাল ইত্যাদি ভরাট করা বেআইনি। আইনের ৫ ধারা অনুযায়ী, প্রাকৃতিক জলাধার হিসেবে চিহ্নিত জায়গার শ্রেণি পরিবর্তন বা অন্য কোনোভাবে ব্যবহার, ভাড়া, ইজারা বা হস্তান্তর বেআইনি। কোনো ব্যক্তি এ বিধান লঙ্ঘন করলে আইনের ৮ ও ১২ ধারা অনুযায়ী পাঁচ বছরের কারাদণ্ড বা অনধিক ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড অথবা উভয়দণ্ডে দণ্ডিত হবেন। একইসঙ্গে পরিবেশ সংরক্ষণ আইন (২০১০ সালে সংশোধিত) অনুযায়ী, যেকোনো ধরনের জলাশয় ভরাট করা নিষিদ্ধ। এছাড়া ২০০০ সালের ২২ মে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের তৎকালীন মুখ্যসচিব স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশে বলা হয়, “কোনো অবস্থাতেই খাল-বিল, নদী-নালা, পুকুর ও প্রাকৃতিক জলাশয়ের স্বাভাবিক গতি ও প্রকৃতি পরিবর্তন করা যাবে না। এমনকি উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নকালে খাল-বিল, পুকুর, নালাসহ প্রাকৃতিক জলাশয়/জলাধার বন্ধ করা যাবে না”। লামা নদী জলাশয় পুকুর ও পরিবেশ রক্ষা কমিটির নেতারা এই বিষয়ে প্রতিবাদে মুখরিত হচ্ছে। পুকুরটি উদ্ধারের দাবিতে যে কোনো সময় মানববন্ধনের মাধ্যমে রাজ পথে সরব হবে তারা। বিষয়টি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ নজরে এনে প্রয়োজনীয় উদ্যেগ গ্রহনের দাবি করেছেন স্থানীয়রা।