জামাল উদ্দীন – কক্সবাজার জেলা প্রতিনিধি।
র্যাব-১৫, কক্সবাজার শুরু থেকেই নিজ দায়িত্বাধীন এলাকায় খুন, ধর্ষণ, অপহরণ, জলদস্যু, ডাকাত, চুরি-ছিনতাই, সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজ, জঙ্গী দমন, মাদক এবং অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারসহ বিরাজমান বিভিন্ন অপরাধ নির্মূলে উল্লেখযোগ্য অবদান রেখে আসছে।
এরই ধারাবাহিকতায় র্যাব ফোর্সেস সদর দপ্তরের গোয়েন্দা তথ্যসহ স্থানীয়ভাবে প্রাপ্ত গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ১৬ মার্চ ২০২৪ তারিখ ভোর ০৬.০০ ঘটিকার সময় র্যাব-১৫, কক্সবাজার এর সিপিএসসি ক্যাম্পের একটি চৌকস আভিযানিক দল কক্সবাজারের জেলার মহেশখালী থানাধীন হোয়ানক ইউনিয়নের পূর্ব পুইরছড়াস্থ খঞ্জনির বাপের ঘোনা পাহাড়ি ঢালা এলাকায় অবৈধ অস্ত্র ও অস্ত্র তৈরী সরঞ্জামাদি উদ্ধার অভিযান পরিচালনা করে এবং সেখানে অভিযান পরিচালনার সময় একটি অস্ত্র তৈরীর কারখানার সন্ধান পায়।
র্যাবের অভিযানের বিষয়টি বুঝতে পেরে অবৈধ অস্ত্র ব্যবসায়ীরা দূর্গম পাহাড়ের এদিক-ওদিক দৌড়ে পালিয়ে যেতে থাকে। এ সময় পলায়নকালে ধাওয়া করে অবৈধ অস্ত্র তৈরী, কেনা-বেচার সাথে জড়িত চক্রের তিনজনকে র্যাবের আভিযানিক দল গ্রেফতার করতে সক্ষম হয় এবং অভিযান পরিচালনাকালে উক্ত অস্ত্র তৈরীর কারখানার অন্যতম কারিগর বাদশা মিয়া কৌশলে দূর্গম পাহাড়ী এলাকায় পালিয়ে যায়। অস্ত্রের কারখানা হতে দুটি দেশীয় তৈরী ওয়ান শুটার গান এবং অস্ত্র তৈরীর সরঞ্জামাদির মধ্যে উল্লেখযোগ্য লোহার তৈরী ড্রিল মেশিন, হাতুড়ী, করাত, চারটি লোহার পাইপ, দুটি লোহার ব্যারেল, হেক্সো ব্লেড, দুটি লোহা কাটার ব্লেড, ষাটটি ওয়াশার, দুটি পাঞ্চিং রড, দুটি বড় নাট, রেঞ্চ, স্টীল সীড, তিনটি লোহার অংশ ও লোহার ব্রাশসহ অস্ত্র তৈরীর আনুষাঙ্গিক ছোট-বড় ৫০টি অস্ত্র তৈরীর বিভিন্ন সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়।
গ্রেফতারকৃত রা হলেন মহেশখালী কালার ছড়া এলাকার ফকিরমোহাম্মদের ছেলে ফরিদ আলম(৫৪) ফরিদুল আলমের ছেলে জিসাদ প্রকাশ সোনামিয়া(২২) ও ফরিদুল আলমের ছেলে মোঃ বাহিম (২০)
জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, গ্রেফতারকৃতরা উক্ত অস্ত্র তৈরীর কারখানার অন্যতম কারিগর বাদশা মিয়া বলে জানায়। তারা মহেশখালী থানাধীন হোয়ানক ইউনিয়নের পূর্ব পুইরছড়া খঞ্জনীর বাপের ঘোনা পাহাড়ে অবস্থান করে দীর্ঘদিন ধরে গোপনে অস্ত্র তৈরী ও অবৈধ অস্ত্র ব্যবসা পরিচালনাসহ ডাকাতি, অপহরণ ও মুক্তিপণ আদায় এবং মাদক’সহ নানাবিধ অপরাধ কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছিল বলে জানা যায়। এছাড়াও দূর্গম পাহাড়ী এলাকা হওয়ার সুবাদে সেখানে গড়ে তুলে অস্ত্র তৈরীর কারখানা। পলাতক ও গ্রেফতারকৃতরা দীর্ঘদিন যাবৎ বর্ণিত কারখানায় কক্সবাজার শহরসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে আগ্নেয়াস্ত্র তৈরীর প্রয়োজনীয় সরঞ্জামাদি সংগ্রহ করে দেশীয় বিভিন্ন ধরণের অস্ত্র তৈরী করতো। পরবর্তীতে প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে এ সকল দেশীয় তৈরী অস্ত্র কক্সবাজার শহর, রোহিঙ্গা ক্যাম্প, সন্ত্রাসী গোষ্ঠী আরসার নিকট এবং দেশের বিভিন্ন প্রান্তে অপরাধীদের নিকট উচ্চ মূল্যে বিক্রয় করে থাকে মর্মে স্বীকার করে।
উদ্ধারকৃত আলামতসহ পলাতক ও গ্রেফতারকৃত আসামীদের বিরুদ্ধে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের নিমিত্তে কক্সবাজারের মহেশখালী থানায় অভিযোগ দাখিল করা হয়েছে।