সময়ের উন্নয়ন ডেস্ক:-
পার্বত্য (বান্দরবান)লামা উপজেলার ৩ নং ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নূর হোছাইন চৌধুরীর বিরুদ্ধে পরিষদের ১২ জন সদস্য অনাস্থা দিয়েছে। অনিয়ম, দুর্নীতি, অর্থ আত্মসাৎ ও স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগে একযোগ হয়ে সকল সদস্য এই অনাস্থা অভিযোগ দিয়েছেন বলে জানাযায়। ১৭ এপ্রিল বুধবার লামা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিতভাবে অনাস্থা দিয়েছেন ইউনিয়নের সাধারণ ও সংরক্ষিত ১২ জন মেম্বার। চেয়ারম্যনের প্রতি তারা অনাস্থা কেন প্রকাশ করেছেন; সেটা সংশ্লিষ্ট কর্তপক্ষ তদন্ত করবেন বলে জানাযায়। এর
ফলে ইউনিয়ন পরিষদের স্বাভাবিক কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে কিনা জানতে চাইলে ওয়ার্ড সদস্য জানান, প্যানেল চেয়ারম্যানদ্বারা পরিষদের কার্যক্রম চলছে।
পরিষদের সদস্য জিয়াবুল জানান, ‘২০২১ সালে বর্তমান পরিষদ নির্বাচিত হয়ে শপথ গ্রহনের পর এক বছর সবকিছু স্বাভাবিক ছিল। এর পর চেয়ারম্যান নূর হোছাইন চৌধুরী পরিষদের ম্যানুয়েলের তোয়াক্কা না করে মনগড়াভাবে কার্যক্রম পরিচালনা করছেন। পরিষদের সরকারি স্টাফদের নিস্ক্রিয় রেখে তিনি ব্যক্তিগত লোকদ্বারা কার্যক্রম করে চলছেন। মাসিক সভাসহ সকল ধরনের কার্যক্রমে মেম্বারদেরকে পাশ কেটে যাচ্ছে। তিনি ইউনিয়ন পরিষদের সভা না করেই সভার ভুয়া রেজুলেশন প্রদর্শন এবং ইউনিয়ন পরিষদ সদস্যদের স্বাক্ষর জাল করে কাজ না করেই কাগজে-কলমে উন্নয়ন কাজ দেখিয়ে বরাদ্দকৃত অর্থ আত্মসাৎ করে আসছেন।
ইউনিয়ন পরিষদের আওতাধীন টিআর, কাবিখা ও কাবিটা প্রকল্পের বরাদ্দকৃত অর্থ কোনো কাজ না করেই একই কায়দায় তিনি আত্মসাৎ করে আসছেন। নূর হোছাবন চৌধুরী তুঘলকি কায়দায় অনিয়ম-দুর্নীতির রাজত্ব কায়েম করেছেন গোটা ইউনিয়নে।এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে অভিযুক্ত ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়ন চেয়ারম্যান নূর হোছাইন চৌধুরী তার বিরুদ্ধে আনীত সকল অভিযোগ মিথ্যা, বানোয়াট, ভিত্তিহীন ও ষড়যন্ত্রমূলক বলে দাবি করেছেন।চেয়ারম্যান নূর হোছাইন চৌধুরীর বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব প্রাপ্তির কথা নিশ্চিত করলেও প্রশাসনের পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত কোনো বক্তব্য পাওয়া যায় নাই।নিয়ম অনুযায়ী এ ধরনের অনাস্থা প্রস্তাব প্রাপ্তির ১০ কার্য দিবসের মধ্যে তদন্ত কর্মকর্তা নিয়োগ করতে হয়। আর ওই তদন্ত কর্মকর্তা কর্তৃক তদন্ত প্রতিবেদন প্রাপ্তি ও ঘটনার সত্যতা সাপেক্ষে অভিযুক্ত চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণের প্রক্রিয়া শুরু করা হবে। ইউনিয়ন পরিষদ আইন ২০০৯ এর ৩৯ ধারার বিধান মোতাবেক আবেদনকারীগণ হলেন; ১। মংমেগ্য মার্মা, ইউ.পি সদস্য, ১নং ওয়ার্ড, ২। কুতুব উদ্দিন মিয়া, ইউ.পি সদস্য, ২নং ওয়ার্ড এবং প্যানেল চেয়ারম্যান-১, ৩। মোঃ হোছাইন মামুন, ইউ.পি সদস্য, ৩নং ওয়ার্ড, ৪। মোঃ আবু ওমর, ইউ পি সদস্য, ৪নং ওয়ার্ড, ৫। আব্দু রহিম, ইউ.পি সদস্য, ৫নং ওয়ার্ড এবং প্যানেল চেয়ারম্যান-৩, ৬। মোঃ হেলাল উদ্দিন, ইউ.পি সদস্য, ৬নং ওয়ার্ড, ৭।মোঃ জিয়াবুল, ইউ.পি সদস্য, ৭নং ওয়ার্ড, ৮। মোঃ ইসমাইল, ইউ.পি সদস্য, ৮নং ওয়ার্ড, ৯। আপ্রুসিং মার্মা, ইউ.পি সদস্য, ৯ নং ওয়ার্ড, ১০। জোসনা আক্তার লিলি, ইউ.পি সদস্য (সংরক্ষিত মহিলা আসন), ১,২ ও ৩ নং ওয়ার্ড, ১১। শাহানা আক্তার, ইউ.পি সদস্য (সংরক্ষিত মহিলা আসন), ৪,৫ ও ৬ নং ওয়ার্ড, ১২। আনাই মার্মা, ইউ.পি সদস্য (সংরক্ষিত মহিলা আসন), ৭,৮ ও ৯ নং ওয়ার্ড এবং প্যানেল চেয়ারম্যান-২, ৩নং ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়ন, সর্বউপজেলা- লামা, জেলা- বান্দরবান পার্বত্য জেলা। ১২ জন সদস্য অনাস্থা পত্রে, ৩নং ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে আনীত অনাস্থা প্রস্তাব গ্রহণ পূর্বক যথাযথ আইনানুগ প্রক্রিয়ায় ৩নং ফাঁসিখালী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান পদ হইতে অপরাসণপূর্বক অব্যহতি প্রদানের নিমিত্তে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের আবেদন করেন।